আমাকে নিয়ে যাচ্ছো, ওদের কি হবে ?
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গ্রেনেড হামলায় আহত এবং মৃত্যুর মুখে পড়েও বারবার আহত-নিহতদের কাছে ছুটে যেতে চাচ্ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তখনকার বিরোধী দলীয় নেত্রী (শেখ হাসিনা)। তার জীবন রক্ষায় হামলার এক পর্যায়ে তাকে চারপাশ থেকে ঘিরে গাড়িতে তুলতে গেলেও তিনি বার বার সভামঞ্চের চারপাশে অসংখ্য আহত নেতাকর্মীর দিকে ছুটে যাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন তোমরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছো কিন্তু এসব আহত নেতাকর্মীদের কী হবে। এসময় অনেকটা জোর করেই তাকে গাড়িতে তুলে জিপিও প্রেসক্লাব হয়ে তাকে সুধাসদনে পৌঁছে দেয়া হয়।
একুশে আগস্ট হামলা মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকী। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় তিনি তখনকার বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।
একজন বিরোধী দলীয় নেতা ও রাজনৈতিক দলের সভাপতির সমাবেশে যে ধরনের নিরাপত্তা থাকার কথা,বলতে গেলে তার কোনো কিছুই ছিল না বলেও সাক্ষ্যে মন্তব্য করেন তারেক আহমেদ সিদ্দিকী।
বুধবার পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেন তিনি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের পর পলাতক আসামিদের পক্ষে তাকে জেরা চলছে।
এ নিয়ে মামলার ৪৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলো।
এরপর ঘটনাস্থল থেকে গাড়িতে করে জিপিও, সচিবালয়ের সামনের রাস্তা দিয়ে তাকে (শেখ হাসিনা) সুধা সদনে পৌঁছে দেওয়া হয়। তখন সন্ধ্যা আনুমানিক ছয়টা বাজছিল।
তারেক আহমেদ সিদ্দিকী জানান, তিনি নিজেও সেদিন আহত হন। তার শরীরে বেশকিছু স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। সিএমএইচে তিনি সাতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তাকে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার অস্ত্রোপচার করে কিছু স্প্লিন্টার বের করা হয়। কিছু স্প্লিন্টার তার শরীরে রয়ে যায়,সেগুলো এখনো আছে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নির্মমভাবে নিহত হন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী।
প্রতিক্ষণ/এডি/ফাহিম